মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সহিংসতার জেরে আবারও বাংলাদেশ সীমান্তে আসছে রোহিঙ্গারা। তাদের অনেকেই গোপনে উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় শিবির এসেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এমন একাধিক পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে।

মাত্র কয়েকদিন আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন হাজেরা বিবি। আশ্রয় নিয়েছেন বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা আত্মীয়ের কাছে। রাখাইনে আবারো রোহিঙ্গা নির্যাতন শুরু হওয়ায় হাজেরার মতো অনেকেই নতুন করে পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে। অনেক রোহিঙ্গা আবার অপেক্ষা করছেন সীমান্তের কাছে।

হাজেরা বিবি জানান, বার্মায় নির্যাতনের কারনে আামার বাবা মা আগে থেকেই এখানে এসেছে। আমিও বাবা মার কাছে চলে এসেছি। বার্মার মধ্যে বেশী গণ্ডগ সংঘর্ষ হচ্ছে তাই এখানে পালিয়ে এসেছি। জেলেদের নৌকায় করে আরো ২ জন নারীর সাথে আমি এ পাড়ে এসেছি।

রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা অনেকের স্বজন এখনও মিয়ানমারে রয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের খবরে উদ্বিগ্ন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

নতুন করে আর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ চান না তারা। তবে সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে সর্তক থাকার কথা জানিয়েছে বিজিবি। উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অন্তত ১৫ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে, দাবি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সংগ্রাম কমিটির।

এদিকে, মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহতের পর তমব্রু সীমান্তে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া ৫টি মর্টারশেল এসে পরে বাংলাদেশের তমব্রু সীমান্তে।

জিরো পয়েণ্টের কাছে পড়া গোলা দেখতে উৎসুক রোহিঙ্গারা ভিড় করলে ২টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এক কিশোর নিহত হয় আহত হয় আরো ৫ জন। আহতদের কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।

এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয়দের সীমান্ত এলাকায় না যেতে অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। এর আগে ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর দুই দফায় ৪টি মর্টার শেল বাংলাদেশের ভেতরে ঘুমধুমে পড়ে। এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।